শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর ::
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কক্সবাজার জেলা শাখার আওতাধীন ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। ঘোষিত নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্ক ও অসন্তুষ ছড়িয়ে পড়ছে। শুরু হয়েছে গণহারে পদত্যাগ। কয়েকজন সহ-সভাপতি, যুগ্ম-সম্পাদকসহ এ পর্যন্ত ১৭ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন। গতকাল ২২ মে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটিটি অনুমোদন দেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মনির উদ্দীন। সদ্য ঘোষিত এ কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ঘন্টা খানেকের মধ্যে ১৭ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন। এমন সংবাদে ঈদগাঁওতে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি ও ২ গ্রুপের মধ্যে যে কোন মুহুর্তে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে রাজনীতিবিদরা। তারা নিজেদের ফেইসবুক আইডি থেকে স্ব স্ব পদত্যাগ পত্রের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন অযোগ্যদের দিয়ে কমিটি মেনে নেওয়া যাবে না এবং পদত্যাগপত্রের অনুলিপি জেলা সভাপতি ও সম্পাদক বরাবরে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে। কমিটি গঠন কল্পে কোন সিনিয়র নেতাকর্মীর পরামর্শ নেওয়া হয়নি। তারা আরো জানান, অহিংস আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি জাতীয় কমিটির মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজলের প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং শহীদ জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করতে বদ্ধ পরিকর। কিন্তু কারো মতামতবিহীন স্বজনপ্রীতি, অবমূল্যায়ণ, অর্থের লোভে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। পদত্যাগকারীরা হলেন সদ্য ঘোষিত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি জুবাইদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রুবেল মল্লিক, নুরুল আমিন, আসাদ ইমরান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ রশিদ ভুট্টো, সাজ্জাদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক বেদারুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, মোশারফ হোছাইন, দপ্তর সম্পাদক সোহেল রানা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোঃ ইছহাক, অর্থ সম্পাদক মামুনর রশিদ মিশুক, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক বোরহান উদ্দীন, সহ- সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মাহমুদুল করিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মিছবাহ উদ্দীন, সহ- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আমানুর রশিদ, সহ-সমাজ সেবা সম্পাদক রমিজ উদ্দীন। সদ্য ঘোষিত কমিটির এক সহ-সভাপতি জানান, ঈদগাঁওবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষা ছিল যে, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে দলের দু:সময়ের কান্ডারীদের ভাল জায়গায় রাখা হবে। কিন্তু অযোগ্য কতিপয় ব্যক্তিকে মূল দায়িত্ব অর্পণ করায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই স্বেচ্ছায় ছাত্রদল থেকে পদত্যাগ করছি। আরেকজন নেতা বলেন, ‘ঘোষিত কমিটিতে একজন বিবাহিত ব্যক্তিকে ছাত্রদলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন ছাত্রদলের সভাপতি বেলাল উদ্দীনের কাছে নেতাকর্মীদের পদত্যাগের সত্যতা জানতে চাইলে তিনি জানান, উপজেলা ও জেলা এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজলের মতামতের ভিত্তিতে কমিটিটি অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। সবাইকে সম্মানজনক দায়িত্বে রাখা হয়নি বলে ক্ষোভে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পদত্যাগ পত্র করছেন বলে জানায়। তবে আমরা দু’পক্ষ বসে সন্ধ্যার মধ্যে বসে বিষয়টি সূরাহা করে ফেলব। কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদ উদ্দীন রাসেলে সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ও তাকে পাওয়া যায়নি। ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা যুবদলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, বিএনপির দু:সময়ে অনেক ছাত্রদল কর্মী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অনেকে পদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিমানেই পদত্যাগ করেছে। আমরা নেতাকর্মীরা তাদের অভিমান ভাঙ্গিয়ে ছাত্রদলকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তুলবো।
পাঠকের মতামত: